অবৈধভাবে উপার্জিত খাবার খেয়ে ইবাদত করলে সওয়াব পাওয়া যাবে না।

অবৈধভাবে উপার্জিত খাবার খেয়ে 

ইবাদত করলে সওয়াব পাওয়া যাবে না।


অবৈধভাবে উপার্জিত খাবার খেয়ে ইবাদত করলে সওয়াব পাওয়া যাবে না। ওই ইবাদতের মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়া যাবে না। মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'ওই দেহ জান্নাতে যাবে না, যা হারাম খাবার থেকে উৎপন্ন। জাহান্নামই এর উপযোগী স্থান।' মানুষ জীবনে যা যা ভোগ করে, সবই তার রিজিক। হালাল রিজিক ইবাদত কবুলের অন্যতম প্রধান শর্ত। রিজিক হালাল বা পবিত্র এবং বৈধ হওয়ার জন্য দুটি শর্ত রয়েছে।

প্রথমত, ব্যবহার্য, ভোগ্য বস্তু বা বিষয়টি হালাল তথা পবিত্র ও অনুমোদিত হতে হবে। দ্বিতীয়ত, তা অর্জনের পথ বা মাধ্যম হালাল বা বৈধ হতে হবে। এ দুইয়ের কোনো একটির ব্যত্যয় ঘটলে ওই রিজিক হালাল বা পবিত্র হবে না।

হালাল সম্পদকেও প্রতি বছর হিসাব করে জাকাত প্রদানের মাধ্যমে পবিত্র করতে হয়। সঠিকভাবে জাকাত আদায় না করলে বৈধ সম্পদও হারাম হয়ে যায়। অজু-গোসল বা পবিত্রতা ছাড়া যেমন নামাজ শুদ্ধ হয় না, ঠিক তেমনি হালাল জীবিকা ছাড়া কোনো ইবাদতই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। হারাম বস্তু হালাল পন্থায় অর্জন করলেও তা যেমন হালাল হবে না, অনুরূপ হালাল বস্তু হারাম পন্থায় লাভ করলে তাও হালাল বা বৈধ হবে না। হালাল উপার্জন অন্যতম ফরজ ইবাদত। রাসুলে পাক (সা.) বলেন, 'হালাল জীবিকা সন্ধান করা নির্ধারিত ফরজগুলোর পরে বিশেষ একটি ফরজ।'

সব মুসলিম নারী ও পুরুষের ওপর হালাল উপার্জন করা ফরজ। 'হালাল উপার্জন একটি জিহাদ।' হালাল ও সৎ উপার্জনের ফজিলত সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি স্বহস্তে উপার্জিত হালাল রিজিক আহার করল, সে বিদ্যুৎগতিতে পুলসিরাত পার হয়ে যাবে।'

'যে ব্যক্তি স্বহস্তে পরিশ্রম করে জীবিকা উপার্জন করে জীবন ধারণ করে, আল্লাহতায়ালা তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান এবং তাকে কখনও শাস্তি দেবেন না।'

'যে ব্যক্তি স্বহস্তে পরিশ্রম করে হালাল রিজিক আহার করল, তার জন্য জান্নাতের দরজাগুলো খোলা থাকবে, সে যেখান দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।'

নবীজি (সা.) বলেন, 'যে ব্যক্তি স্বহস্তে পরিশ্রম করে জীবিকা অর্জন করল, কিয়ামতের দিন সে নবীগণের সঙ্গে শামিল হবে এবং অনুরূপ পুণ্য লাভ করবে।'

হালাল রিজিক ও সৎ উপার্জনের সব প্রচেষ্টাই ইবাদত। জীবিকার জন্য প্রিয় নবীজি (সা.) চাকরি করেছেন, ব্যবসা করেছেন। কোনো শ্রমিক তার মনিবকে ফাঁকি দিলে তার উপার্জন হালাল হবে না। মনিব তার শ্রমিককে ঠকালে, ন্যায্য পাওনা না দিলে তার সম্পদ হালাল হবে না। কর্মচারী মালিকের সঙ্গে প্রতারণা করলে তার উপার্জন হালাল হবে না, মালিক তার কর্মচারীর প্রতি জুলুম ও অবিচার করলে তার সম্পদ হালাল হবে না।

ইসলাম এক মহান ও সৌন্দর্যমণ্ডিত জীবন বিধান। মানুষের জীবন স্বাচ্ছন্দ্যময় করার উদ্দেশ্যে ইসলামের বহু বিধিবিধান দেওয়া হয়েছে। ইসলামে যদি কোনো জিনিস হারাম করা হয়, তাহলে তার পরিবর্তে কোনো উৎকৃষ্টতর জিনিসকে হালাল করে দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে হালাল উপায়ে উপার্জন করে জীবনযাপনের তৌফিক দান করুন।

Post a Comment

0 Comments

Our Total Visitor's