গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান । প্রতিদিনকার যাপিত জীবনে এই কথাটি আমরা শুনে থাকলেও খুব বেশি মেনে চলি না। তবে কিছু মানুষ আছে যারা এই আপ্ত বাক্যটি শুধু শোনেন না মেনে চলেন অক্ষরে অক্ষরে। ভারতের উত্তরখান্ড প্রদেশের বিশ্বেশর দত্ত তেমনই একজন মানুষ।
জন্মেছিলেন উত্তরখন্ডের উষর প্রান্তরে। তবে সেই উষর ভূমি আজ তার হাতের স্পর্শে হয়ে উঠেছে সবুজ-শ্যামল প্রান্তর। মাত্র আট বছর বয়সে একটি গাছের চারা পুতে যে উদ্যোগ তিনি শুরু করেছিলেন গত ছয় দশকে তা পরিণত হয়েছে মহীরুহে। প্রায় পঞ্চাশ মিলিয়ন গাছ লাগিয়েছেন তিনি।
যত সহজে বিশ্বেশরের এই গল্পটা বলা হল তার জীরনটা অত সহজ ছিল না। ষাটের দশকের শেষের দিকে একই বছর হারিয়েছিলেন বড় ভাই এবং স্ত্রীকে। এরপর প্রায় একাই থাকেন। টানাপোড়েনের সংসার তার। তবে এত প্রতিকূলতার মাঝে একদিনের জন্যও গাছ লাগানো বন্ধ করেননি তিনি। গাছ লাগাতে যেয়ে প্রতিবেশীর কটু কথা শুনেছেন, লোকের হাতে মার খেয়েছেন তবুও থেমে যাননি। পাহাড়, রাস্তার দুই ধার, নদীর তীর কিংবা অন্যের পতিত জমি যেখানেই খালি জায়গা পেয়েছেন সেখানেই গাছ লাগিয়েছেন। এভাবে গত ষাট বছরে একটি দুইটি করে তিনি লাগিয়েছেন প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ গাছ।
প্রথমদিকে এলাকার লোকেরা তাকে পাগল সাবস্ত্য করলেও ধীরে ধীরে তারা বিশ্বেশরের এই মহৎ উদ্যোগের সুফল পেতে শুরু করে। আস্তে আস্তে নিজের এলাকার গন্ডি ছাড়িয়ে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারতে। ভারত সরকার তাকে ‘বৃক্ষমানব’ উপাধী দিয়ে রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করে।
গত মাসের ১৯ তারিখ ইহলোকোর মায়া ত্যাগ করে পরলোকে পাড়ি জমিয়েছেন বিশ্বেশর। তবে তিনি যে কীর্তি রেখে গেছেন তা পৃথিবীর বুকে থাকবে জন্ম থেকে জন্মান্তর।
0 Comments
Thanks for your feedback.